
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তার রাজনৈতিক জীবনের শেষ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের আবেগমিশ্রিত এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন পোস্টে।
“এটাই আমার শেষ নির্বাচন”
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে মির্জা ফখরুল লিখেছেন—
“মহান আল্লাহর রহমতে বিএনপি আমাকে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে। আমি বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং দলের সব নেতা-কর্মীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।”
তিনি আরও লেখেন, “এই নির্বাচনই আমার শেষ নির্বাচন। যারা মনোনয়ন পাননি, তারা বিশ্বাস রাখুন—ইনশাআল্লাহ দল আপনাদের যথাযথ সম্মান ও দায়িত্ব দেবে।”
স্মৃতিচারণে আন্দোলন-সংগ্রামের বছরগুলো
পোস্টটিতে তিনি তুলে ধরেছেন নিজের রাজনৈতিক জীবনের কিছু অনুচ্চারিত অধ্যায়।
তিনি লিখেছেন,
“আমরা যারা সারাজীবন রাজনীতি করেছি, জেলে গেছি, আন্দোলন করেছি—আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু গল্প আছে, যা হয়তো অনেকে জানেন না। আমি যখন ১৯৮৭ সালে রাজনীতিতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমার দুই মেয়ে ছোট। স্ত্রী তখনও তরুণী, কিন্তু অসীম সাহস নিয়ে সংসারের ভার সামলেছে।”
তিনি আবেগের সঙ্গে বলেন,
“আমার বড় মেয়ের একবার অপারেশন হয়, আমি তখন ঢাকার পথে গাড়িতে রাত কাটিয়েছিলাম, যেন সকালে তার পাশে থাকতে পারি। অপারেশনের সময় আমি মসজিদে বসে দোয়া করছিলাম। এসব গল্প হয়তো অন্য কোনোদিন বলব—যদি আল্লাহ চান।”
নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা
দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রায় সঙ্গী হওয়া নেতাকর্মীদের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে ফখরুল লেখেন,
“আমার জন্য দোয়া করবেন, আমাদের দলের প্রতিটি নেতাকর্মীর জন্য দোয়া করবেন। আমরা সবাই একসঙ্গে মানুষের পাশে থাকব, ইনশাআল্লাহ।”
বিএনপির প্রার্থী তালিকা
উল্লেখ্য, সোমবার বিএনপি মহাসচিব গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে ২৩৭টি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করেন। এরই মধ্যে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে।
দীর্ঘ চার দশকের রাজনৈতিক লড়াই, আন্দোলন-সংগ্রাম ও কারাবাসের অভিজ্ঞতা পেছনে ফেলে মির্জা ফখরুলের এই ঘোষণা বিএনপি অঙ্গনে এক বিশেষ আবেগ তৈরি করেছে। অনেকে বলছেন, এ যেন এক প্রজন্মের রাজনৈতিক যাত্রার প্রতীকী অধ্যায়ের সমাপ্তি।
চট্টগ্রামের খবর/চাটগাঁর সংবাদ
