আজ ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঘুমের মধ্যেই স্ট্রোক করে প্রবাসী আরিফের মৃত্যু, শোকের ছায়া হাটহাজারীতে


নিউজ ডেস্ক: সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে ঘুমের মধ্যেই স্ট্রোক করে মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ খান নামে চট্টগ্রাম হাটহাজারীর এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি আজমান শহরের সালাম শপিং সেন্টারের একজন ব্যবসায়ী।

বুধবার (১৪ মে) সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমান শহরে নিজ বাসায় স্ট্রোক করে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন এই প্রবাসী। রেখে গেলেন সাড়ে চার বছর বয়সী আছিফা এবং মাত্র বিশ মাস বয়সী আদিবা নামের দুটি ফুটফুটে কন্যাসন্তান, যারা হয়তো এখনো বুঝে উঠতে পারেনি তাদের বাবা আর কোনোদিন ফিরে আসবে না।

আরিফের অকাল মৃত্যুর খবরে তার গ্রামের বাড়ি হাটহাজারীর মেখল ইউনিয়নের মোজাফফরপুর গ্রামের বাদশাহ মিয়া সওদাগরের বাড়ি এবং পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিএম হাউসে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্বজনদের বুকফাটা আর্তনাদ আর আহাজারিতে সেখানকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, হাটহাজারী পৌরসভার কাচারি সড়কের ‘আজম এন্ড ব্রাদার্স’ নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ছিলেন সদা হাস্যোজ্জ্বল আরিফ। পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা আরও বাড়াতে ২০২৩ সালের জুন মাসে তিনি পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানে একটি কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। লক্ষ্য ছিল, ব্যবসার খুঁটিনাটি শিখে একদিন নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাবেন।

কিন্তু বুধবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ছয়টার দিকে (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে আটটা) তার সেই স্বপ্নের অকালমৃত্যু ঘটে। নিজ বাসাতেই তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। আশপাশের লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে আরিফের মরদেহ আমিরাতের একটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

নিহত আরিফের ছোট ভাই আহসান উল্লাহ খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ভাই আর নেই। তার দুটি অবুঝ শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের কী হবে এখন!” কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

প্রবাসে একজন সম্ভাবনাময় যুবকের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু শুধু তার পরিবারকেই নয়, পুরো এলাকাবাসীকে শোকস্তব্ধ করে দিয়েছে। আরিফের চলে যাওয়ায় তার রেখে যাওয়া দুটি অবুঝ শিশু কন্যার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল, আর তার পরিবারের স্বপ্নগুলো মুহূর্তেই যেন ধূলিসাৎ হয়ে গেল। নিয়তির এই নির্মম পরিহাস মেনে নিতে পারছেন না কেউই।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর