নিউজ ডেস্ক: আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর ও বিভিন্ন উপজেলায় বসছে মোট ২২৮টি কোরবানির পশুর হাট। এর মধ্যে ৭৫টি স্থায়ী এবং ১৫৩টি অস্থায়ী হাট, যেখানে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার বেচাকেনা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে কোরবানি পশু বেচা-কেনা শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আওতায় নগরে বসছে ১৩টি হাট, যার মধ্যে তিনটি স্থায়ী এবং ১০টি অস্থায়ী। নগরের সাগরিকা, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় এলাকায় স্থায়ী হাট চালু থাকছে। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নির্ধারিত স্থানে অস্থায়ী হাটও বসানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এবার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গবাদিপশুর সংখ্যা ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯টি। ওই হিসেবে এবার ৮ হাজার ৫২৩টি বেশি গবাদিপশু উৎপাদিত হয়। কিন্তু এরপরও স্থানীয় উৎপাদনে চাহিদা মিটবে না। কারণ এবার চট্টগ্রামে কোরবানি পশুর সম্ভাব্য চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি। অর্থাৎ চাহিদার বিপরীতে স্থানীয় উৎপাদন অনুসারে এবার ঘাটতি আছে ৩৫ হাজার ৩৮৭টি কোরবানির পশু।
চট্টগ্রামে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বা হৃষ্টপুষ্ট কোরবানির পশুর মধ্যে গরুর সংখ্যাই বেশি। এবার মোট উৎপাদিত কোরবানি পশুর মধ্যে গরু আছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৩টি। এছাড়া ৬৪ হাজার ১৬৩টি মহিষ, ২ লাখ ৫১ হাজার ৭৪টি ছাগল এবং ৫৫ হাজার ৬৯৭টি ভেড়া রয়েছে।
স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পশুর মধ্যে নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকায় ২০ হাজার দুইটি, ডবলমুরিংয়ে ১০ হাজার এবং কোতোয়ালীতে চার হাজার ৩৩১টি গবাদিপশু হৃষ্টপুষ্ট করা হয়। এছাড়া সাতকানিয়া উপজেলায় ৪৮ হাজার ১২৪টি, চন্দনাইশে ৪৮ হাজার চারটি, আনোয়ারায় ৬৫ হাজার ২১১টি, বোয়ালখালীতে ৩১ হাজার ১৬০টি, পটিয়ায় ৭৮ হাজার ৭৯১টি, কর্ণফুলীতে ৩৩ হাজার ৬২৯টি, মীরসরাই উপজেলায় ৬০ হাজার ৭৮০টি, সীতাকুণ্ডে ৫৯ হাজার ২১৩টি, হাটহাজারীতে ৪৮ হাজার ২৮০টি, রাঙ্গুনিয়ায় ৫১ হাজার ৮১৪টি, ফটিকছড়িতে ৭৮ হাজার ৫৩০টি, লোহাগাড়ায় ৪০ হাজার ৬২টি, রাউজানে ৩৫ হাজার ৭০১টি, বাঁশখালীতে ৬২ হাজার এবং সন্দ্বীপে ৮৫ হাজার ২৫০টি গবাদিপশু রয়েছে।
নগরের অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে- ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের কর্ণফুলী পশুর বাজার (নূর নগর হাউজিং এস্টেট অথবা বহাদ্দারহাট এক কিলোমিটার হতে শাহ আমানত ব্রিজের উত্তর পাশ পর্যন্ত), ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের পূর্ব হোসেন আহম্মদ পাড়া সাইলো রোডের পাশে টিএসপি মাঠ, ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের আউটার রিং রোডস্থ সিডিএ বালুর মাঠ, ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের মুনিরনগর আনন্দ বাজার সংলগ্ন রিং রোডের পাশে খালি জায়গা, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডের গলাচিপাপাড়া বারানিঘাটা রোড সংলগ্ন মাঠ, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাড়া আলমগীর সাহেবের মাঠ, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বাটারফ্লাই পার্কের উত্তরে চেয়ারম্যান মাঠ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বড়পোল এলাকার খালপাড় অস্থায়ী পশুর বাজার, সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন খালি মাঠ ও ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের ধুমপাড়া সাগরপাড় লিংক রোডসংলগ্ন রেজাউল আমিন মাঠ।
জানা গেছে, নগরের বাইরে উপজেলার স্থায়ী-অস্থায়ী হাটগুলোর মধ্যে মীরসরাইয়ে ২০টি, সীতাকুণ্ডে ১৫টি, সন্দ্বীপে ২০টি, ফটিকছড়িতে ২০টি, রাউজানে ১৬টি, রাঙ্গুনিয়ায় ২০টি, হাটহাজারীতে ২৩টি, বোয়ালখালীতে ১১টি, পটিয়ায় ১০টি, চন্দনাইশে ১৩টি, আনোয়ারায় ১৫টি, সাতকানিয়ায় ১৮টি, লোহাগাড়ায় ৭টি, বাঁশখালীতে ১২টি এবং কর্ণফুলীতে ২টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাট বসছে। নগর ও উপজেলার কোরবানির পশুর হাটগুলো মনিটরিংয়ের জন্য ৬৬টি ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বলেন, প্রতিবছর চট্টগ্রামের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু নিয়ে আসেন বেপারিরা। পার্বত্য জেলাগুলো থেকেও গরু আসে। তাই স্থানীয় উৎপাদন কম হলেও এবার কোরবানির পশুর সংকট হবে না। বরং চাহিদা মিটিয়ে আরও উদ্বৃত্ত থাকতে পারে।
Leave a Reply