আব্দুল্লাহ আল মারুফ নিজস্ব প্রতিবেদক।। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ওয়াহেদার পাড়া ১৩২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়র ৪ শত ফুট রাস্তা যেন গলার কাঁটা,তিনটি গ্রামের শতাধিক শিশুর শিক্ষার একমাত্র আশ্রয়স্থল এই প্রাথমিক বিদ্যালয় টি। মুনার পাড়া, লতাপাতা পাড়া ও ওয়াহেদার পাড়ার শিশুরা প্রতিদিন এই বিদ্যালয়ে আসে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিদ্যালয়টিতে পৌঁছানোর কোনো পাকা রাস্তা নেই। কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মিত হলেও রাস্তাটি রয়ে গেছে কাঁচা ও ভাঙাচোড়া ছোট।বছরের পর বছর ধরে শিশুদের কাদামাটির মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। রাস্তাটি কাদায় পরিণত হয়, পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়ে যায়, জামাকাপড় ভিজে ও ময়লা হয়ে যায়। এতে শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ কমে যায়, অনেকেই স্কুলে যেতে অনীহা প্রকাশ করে।অভিভাবক আবুল হাসেম বলেন, “প্রতিদিন এভাবে কাদা মাড়িয়ে শিশুদের স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগে। কেউ ঠিকমতো যেতে পারে না, কেউ কাঁদায় আটকে পড়ে। বর্ষায় তো চারদিকে পানি জমে যায়। অনেক সময় স্কুলের কার্যক্রমও বন্ধ রাখতে হয়।”বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা মফিজুর রহমান জানান, “বর্ষায় রাস্তা দিয়ে প্রায় আট ফুট পানি উঠে যায়। স্কুলের পাশের মসজিদের পুকুর পাড় দিয়ে যে রাস্তা ছিল, সেটিও নতুন ভবনের মালামাল আনতে গিয়ে ধসে পড়ে গেছে। এখন বাধ্য হয়ে কবরস্থানের ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।”এই অবস্থায় শিক্ষার্থীরা তাদের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি মানবিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে, যেন তিনি রাস্তা নির্মাণে সহযোগিতা করেন।বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকাবাসী বলছেন, দ্রুত রাস্তা নির্মাণ না হলে প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে। অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়ে সন্তানদের স্কুলে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে জানান, “বর্তমানে সরকারের নতুন কোনো বরাদ্দ নেই। তবে আমরা স্কুলের পাশের মসজিদের পুকুর পাড়ে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণের একটি প্রস্তাবনা দিয়েছি। অনুমোদন পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজটি শুরু করব। রাস্তা ও মাটি ভরাটের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।”সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, “যদি সমস্যা বেশি হয়, তাহলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”তিন গ্রামের মানুষের একটাই দাবি—শিশুরা যেন শুধুমাত্র একটি পাকা রাস্তার অভাবে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়। এখন দেখার বিষয়, এই মৌলিক সমস্যার সমাধান কত দ্রুত আসে।