বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া এসএসসি পরীক্ষা আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হবে। আর এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে নভেম্বরে। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। রোববার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সিলেটে বন্যার কারণে এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। বর্তমানে বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতির দিকে আছে। যদিও সিলেট অঞ্চলে এখনও কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার্তদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি এ মাসের শেষ নাগাদ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করা হবে। কিছু এলাকায় বন্যার পানিতে শিক্ষার্থীদের বই-পুস্তক নষ্ট হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে তাদের সংখ্যা নিরূপণ করা হয়ে গেছে। আশা করছি, আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন বই বিতরণ করতে পারব।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগস্টের মাঝামাঝি দক্ষিণাঞ্চলে বড় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে আগস্ট মাস বাদ দিয়ে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছি। কারণ আগস্টে বন্যা হলেও সেপ্টেম্বরের ৮-১০ তারিখ পর্যন্ত থাকে। সে কারণে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা আশা করছি, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। শিক্ষা বোর্ডগুলো অতিদ্রুত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করবে।
এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণত দুটি পরীক্ষার মাঝে আমাদের দুই মাস সময় লাগে। সে অনুযায়ী নভেম্বরের মাঝামাঝি পরীক্ষা শুরু করার কথা। তবে বোর্ডগুলোর একটু কষ্ট হলেও ৪৫ দিনের মধ্যে অর্থাৎ নভেম্বরের শুরুতে পরীক্ষা আয়োজন করতে চাচ্ছি।
শিখন ঘাটতির বিষয়ে তিনি বলেন, আগামী বুধবার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা করবে এনসিটিবি। সেখান থেকে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। তারা আমাদের কর্মপরিকল্পনা দিলে সে অনুযায়ী তারিখ নির্ধারণ করে আমরা কাজ শুরু করে দেব।
মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাস সব একইরকম থাকবে, সেখানে কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে কোন পরীক্ষার আগে-পরে কতটা গ্যাপ থাকবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে হয়ত পরিবর্তন আসবে। লম্বা সময়ে না নিয়ে যতটুকু কম সময়ের মধ্য পরীক্ষা নেওয়া যায়, সে চেষ্টা আমাদের থাকবে। তবে এতে পরীক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা যাতে না হয়, সেটাও আমরা বিবেচনা করব।
দীপু মনি বলেন, এসএসসি ও দাখিল মিলিয়ে সিলেটে ৬৮২ সেট আর সুনামগঞ্জে ১০ হাজার ৫৮৬ সেটসহ মোট ১১ হাজার ২৬৮ সেট নতুন বই দেওয়া হবে। এছাড়া অন্যান্য শ্রেণির বইও দিতে হবে। মাধ্যমিক স্তরের ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম এবং ১০ম শ্রেণি ও ভোকেশনাল স্তরে সিলেটে ১৪ হাজার ৭৭৯ সেট এবং সুনামগঞ্জে ৪২ হাজার ৭৫৫ সেটসহ মোট ৫৭ হাজার ৫৩৪ সেট বই লাগবে। ইবতেদায়ি ও দাখিল ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম এবং ১০ম শ্রেণি ও ভোকেশনাল স্তরে সিলেটে ১০ হাজার ১৪০ সেট এবং সুনামগঞ্জে ২৩ হাজার ৫৫৮ সেটসহ মোট ৩৩ হাজার ৬৯৮ সেট বই লাগবে। সবমিলিয়ে সিলেটে ২৫ হাজার ৬০১ এবং সুনামগঞ্জে ৭৬ হাজার ৮৯৯ সেট বই দিতে হবে। কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম অঞ্চল এবং নরসিংদী জেলার উদ্বৃত্ত থেকে দিয়ে দিতে পারব আশা করছি। এরপরও চাহিদা থাকলে এনসিটিবির বাফার স্টক থেকে দিয়ে দেব।
Leave a Reply