আজ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হাটহাজারীতে এলএসডি ভাইরাসে আক্রান্ত বাছুর


মোঃ শোয়াইব, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। রোগটি গরুর জন্য বসন্ত রোগ বলেও জানাচ্ছেন খামারিরা। গাঁট পক্স ভ্যাকসিন দিয়ে রোগটি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা হলেও তা সঠিকভাবে কাজ করছেনা। এই রোগ মশা বা মাছির মাধ্যমে আক্রান্ত পশু থেকে সুস্থ পশুর কাছে ছড়ায়।এর সঠিক ভ্যাকসিন না থাকায় বিপাকে খামারিরা।

জানাযায়, এই রোগে আক্রান্ত গরুর প্রথমে জ্বর এবং খাবারের রুচি কমে যায়। জ্বরের সাথে সাথে নাক ও মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়, দুই পায়ের মাঝে পানি জমে যায়। পশুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষত শরীরের অন্যান্য জায়গায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাইরাস গবাদি পশুকে আক্রমণ করে থাকে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গতমাসে ৭০টি গরু আক্রান্ত হয়েছে বলে জানাগেছে। তারমধ্যে ৮০শতাংশ গরু সুস্থ হয়েছে। এর কোনো প্রতিষেধক না থাকায় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে খামারিরা।

এলএসডি গরুর জন্য একটি ভয়ঙ্কর ভাইরাসজনিত রোগ, যা খামারের ক্ষতির কারণ। আক্রান্ত গরু সুস্থ হতে দীর্ঘদিন সময় লাগে। অনেক ক্ষেত্রে মারাও যায়। একটি খামারকে অর্থনৈতিকভাবে ধসিয়ে দিতে খুরা রোগের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর রোগ এটি। ছাগল ও ভেড়ার পক্স ভাইরাসের সাথে এ ভাইরাসের খুবই সাদৃশ্য পাওয়া যায়। খামারের ভেতর এবং আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে মশা-মাছির উপদ্রব কমিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হেলাল চৌধুর পাড়া এলাকার ওমর আলী নামে একব্যক্তির গাভী একটি বাছুর দেয়, দুইমাস বয়সী বাছুরটি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় প্রায় দেড় মাস। এই দেড় মাসে তার চিকিৎসা খরচ বহন করতে গিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন। ওমর আলী বলেন, বাছুরটি আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় এক ডাক্তার চিকিৎসা দিচ্ছেন, তবে দেড় মাস পাড় হলেও তেমন কোন উন্নতি দেখা যাচ্ছেনা।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার নাবিল ফারাবী বলেন, ২০১৯ সালে প্রথম বাংলাদেশে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগটি নিশ্চিত হয়। এরপর আমরা Goat pox vaccine দিয়ে রোগটি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। বর্তমান বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিএলআরআই) এই রোগের ভ্যাকসিন তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রোগটি মশা ও মাছির কামড়ে আক্রান্ত পশু থেকে সুস্থ পশুদের ছড়াই। একারণে গরুর খামারে নিয়মিত মশা মাছি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর