
আবদুর রাজ্জাক: কক্সবাজারের টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ধেছুয়াপালং এলাকায় বিলাসবহুল বাড়ি করে প্রকাশ্যে ইয়াবা ব্যবসা ও মানব পাচার করে যাচ্ছে রোহিঙ্গা লিয়াকত আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা। লিয়াকত ও তার পরিবারে কয়েকজন সদস্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে আত্মগোপনে ওই এলাকায় বসবাস করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের রয়েছে একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী ও অপহরণকারী ব্যক্তি। তবে ওই এলাকায় রাজকীয়ভাবে বসবাস করলেও কেউ জানার উপায় নেই তারা যে রোহিঙ্গা। এলাকার তাদের চলাচল যেন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাতে যত গভীর হয় ততই রোহিঙ্গা মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায় তার বাড়িতে। তারা নিয়মিত টেকনাফ সিমান্ত থেকে মোটরসাইকেল করে ইয়াবা এনে রাতে পাচার করে। তাদের চলাচল যেন প্রভাবশালীদের মত। তারা এলাকায় আলিশান ঘরবাড়ি করে বসবাস করছে। তথ্যসূত্রে জানা যায় লিয়াকত আলি বনবিভাগের প্রায় ১ একর জায়গা দখল করে ৫ তলা ফন্ডিশন দিয়ে ১ তলা বাড়ি নির্মাণ করেছে। ওই গ্রামে কয়েকজন স্থানীয় নেতা ও প্রভাবশালীদেরকে মোটা অংকের টাকা মাসোয়ারা দিয়ে বসবাস করে যাচ্ছে। সেই প্রথমে মায়ানমার থেকে টেকনাফ হয়ে ইয়াবা এনে এই এলাকায় মজুদকরে। ফলে তার আপন বোন কহিনুর বেগম প্রকাশ সুন্দরী ও তার স্বামী গাজীপুরের মোস্তফা কামালের মাধযমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইয়াবা পাচার করে।
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে জানা যায়, তারা বংশগতভাবে রোহিঙ্গা। তারা কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। তাদের সিন্ডিকেটে বর্তমান রোহিঙ্গা ও অপহরণকারী এবং স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি রয়েছে। তাদের নিজস্ব বাহিনীও গড়ে তুলেছে ওই এলাকায়। ফলে তারা এই গ্রামে এসে বাড়ি গাড়ি দোকান সহ সম্পত্তি গড়ে তুলেন।তারা অল্প দিনে কোটিপতি বনে যান। এ যেন আলাদিনের চেরাগ কে হার মানাবে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী রোহিঙ্গারা গ্রামেগঞ্জে গিয়ে তারা কোনই ভাবেই বসবাস করতে পারবে না। এবং তাদের কোন ধরনের বাংলাদেশের এন আইডি কার্ড করা যাবে না। তাদের কাছে এনআইডি কাড, পাসপোর্ট ও জন্ম সনদ রয়েছে। তারা ইয়াবার কালো টাকার বিনিময়ে এইসব এনআইডি হতে পাসপোর্ট জন্ম সনদ করিয়ে নেয়।
তথ্যসূত্রই জানা যায় রোহিঙ্গা লিয়াকত আলী স্থায়ীভাবে রামুর খুনিয়া পালং ইউনিয়নের ধেছুয়াপালং এ বসবাস করলেও সে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা হামিদ হোসেনের বাড়ি, গ্রাম উত্তর নুনিয়া ছড়া, পোস্ট অফিসঃ কক্সবাজার সদর, উপজেলাঃ কক্সবাজার সদর, জেলাঃ কক্সবাজার দেখিয়ে এনআইডি কার্ড করেন।
অপরদিকে লিয়াকতের আপন বোন কহিনুর বেগম প্রকাশ সুন্দরী ও তার স্বামী গাজীপুরের মোস্তফা কামাল ফের ইয়াবা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। তার স্বামী মোস্তফা কামাল সম্প্রতি ৬ হাজার ইয়াবা নিয়ে আটক হয়। পর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জেল থেকে বের হয়ে পুনরায় স্বামী-স্ত্রী ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা কহিনুর বেগম প্রকাশ সুন্দরী তার স্বামীসহ রামুর খুনিয়া পালাং এ স্থায়ীভাবে বসবাস করলেও সে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তার স্থায়ী ঠিকানা: গ্রামঃ কাঠালী, পোঃ বরমী. থানাঃ শ্রীপুর, জেলাঃ গাজীপুর এবং বর্তমান ঠিকানা আব্দুস ছাত্তারের ভাড়া বাসা, দক্ষিণ পতেঙ্গা, ১৪নং চরবস্তী, পোঃ বিমান বন্দর, থানাঃ পতেঙ্গা, জেলাঃ চট্টগ্রাম দেখিয়ে জন্ম নিবন্ধন করেন।
এই বিষয় নিয়ে খুনিয়াপালং ইউনিয়ন এর ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার জানান,তারা দীর্ঘ বছর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে এই গ্রামে বসবাস করে যাচ্ছে। তাদের একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী ও নিজস্ব বাহিনী রয়েছে। তাদের সিন্ডিকেট অনেক স্থানীয় ব্যক্তি রয়েছে। তাদের ইয়াবার টাকায় অনেকেই মুখ খুলতে পারতেছে না। ফলে তারা এই ইয়াবার কালো টাকা দিয়ে গাড়ি সম্পত্তিসহ অনেক কিছু গড়ে তুলেছে। তবে আমরা চাই তাদেরকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করে ক্যাম্পে ফেরত দেওয়া হোক।
এলাকাবাসীরা জানান, বর্তমানে লিয়াকত নামে এক ব্যক্তি আমাদের গ্রামে বসবাস করে যাচ্ছে। তাদের পরিবারে একাধিক সদস্য রয়েছে। তারা বর্তমানে রোহিঙ্গা। তাদের ঘরে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত সু-কৌশলে রোহিঙ্গারা যাওয়া আসা করে। তাদের বাড়িতে মায়ানমার থেকে ইয়াবা এনে মজুদ করে রাখে। ফলে এখান থেকে বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়। তবে আমরা চাই তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
এই বিষয় নিয়ে খুনিয়া পালং ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হক কোম্পানি জানান, ধেছুয়াপালং এলাকায় কয়েকজন রোহিঙ্গা বসবাস করে। এটি তার নজরে পড়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান
