আজ ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মাদক পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট রাঙ্গুনিয়া উপজেলা


নুরুল আবছার চৌধুরী

রাঙ্গুনিয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে চলে গেছে। এর মুল কারণ হচ্ছে মাদক বাণিজ্যের জন্য। চলমান চুরি, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা ও রাজনৈতিক গ্রুপিং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সেনা বাহিনী টহল থাকলেও পুলিশ বাহিনী এখনো নিষ্ক্রিয় ভুমিকায় পালন করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বেশির ভাগ ভয়ঙ্কর সমস্যা মধ্যে অবস্থান করছেন মাদক ও বালু বিষয় নিয়ে। এখন উপেন ভাবে চলছে মাদক বাণিজ্য। মাদকের এত বেশি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যা হাত পাতলেই বিভিন্ন রখম মাদক মরণনেশা ইয়াবা, ফেনসেডিল, চোলাইমদ। সহজলভ্য হওয়ায় তরুন ও যুবসমাজ ধ্বংসের মুখে পড়েছে। মাদকের অবাধ বিস্তারে এলাকায় অপরাধ প্রবণতা ভয়ঙ্কর ভাবে রুপ নিয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে কক্সবাজার ও বান্দরবন জেলা হয়ে রাঙ্গুনিয়ার প্রবেশদ্বার পদুয়া ও চন্দ্রঘোনা এলাকায় ইয়াবার বড় চালান প্রবেশ করছে।

এছাড়াও রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলা হয়ে রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট ও পোমরা মালিরহাট হয়ে ইয়াবা, চোলাইমদ ও হেরোইন চালান আসছে। রাঙ্গুনিয়া দিয়ে পাচার হচ্ছে ইয়াবার বড় চালান। রাঙ্গুনিয়াকে ট্রানজিট হিসেবে মাদক কারবারিরা ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। বিগত সরকারের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নামধারী নেতাদের ছত্রছায়ায় কিছু নামধারী পুলিশ-আনসার ও গ্রাম পুলিশের যোগসাজছে রানীরহাট, চন্দ্রঘোনা, রোয়াজারহাট, সরফভাটা, মরিয়মনগর, ধামাইরহাট, শীলক, কোদালা, বেতাগী ও পোমরা মালিরহাট চিহ্নিত মাদক সম্রাটদের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক স্পটে নিরাপদে মাদক বিকিকিনি হচ্ছে বলে জানা গেছে। থানার ক্যাশিয়ারের মাধ্যমে মাদক ও বিভিন্ন অপরাধের স্পট থেকে মাসোহারা নেয়ার অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পরিছন্ন কিছু রাজনৈতিক বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নেতারা জানান, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার এর পতনের পরও একদিনের জন্যও মাদক ব্যবসা বন্ধ হয়নি। বরং মাদক ব্যবসা আরো বেশী বেড়েছে। পাড়া – মহল্লায় ইয়াবা ট্যাবলেট এখন মহামারী রুপ নিয়েছে। প্রায় মহল্লায় গ্রাৃম গঞ্জে মরণনেশা ইয়াবা ও মাদকের কারবার জমজমাট রয়েছে। এখানকার পরিবেশ বাদীরা জানান, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবনের মাদক পাচারে নিরাপদ ট্রানজিট পয়েন্ট চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা কৌশলে রাঙ্গুনিয়ার কর্ণফুলী নদী ও বিভিন্ন সড়ক পথে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছে ইয়াবার চালান। উপজাতীয় পাহাড়ি পল্লী চন্দ্রঘোনা কুষ্ঠ পাহাড় বীরোসিন এর মাধ্যমে চোলাইমদ উৎপাদন করে নিরাপদে অন্যত্র পাচার কাজ চালাচ্ছে । ওইসব উপজাতিয় পল্লীগুলি মধ্যে চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম এর পরে পদুয়া ইউনিয়নের পাহাড়ে ও পোমরা মাইল্লের হাটের ভিতরে পাহাড়ী পল্লীগুলিতে রয়েছে প্রভাবশালী বাংলা মদের হাট। ওসব চক্রটি খুবই প্রভাবশালী। মাদক পাচার ও আইনশৃঙ্খলা ব্যাপারে গত ২৪ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়া থানা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাথে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সংবাদকর্মীরা মাদক সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু পুলিশের ওসি ওই ব্যাপারে দাবী করা হলেও এলাকায় উল্লেখ্যোগ্য অভিযান তেমন দেখা যাচ্ছে না।

স্থানীয় পুলিশ বাহিনী ও চট্রগ্রাম থেকে এসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঝটিকা অভিযানে মাদক সহ ব্যবসায়ীরা আটক হলেও গোপনে অর্থ মাধ্যমে পরে মাসিক মাসোহারা বসিয়ে দিয়ে প্রায় আসামি কে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ স্থানীয়দের মুখে মুখে। ওই কারনে বন্ধ হচ্ছে না মাদক পাচার। উপজেলা সদর থেকে জানা যায়, সম্প্রতি রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার সংলগ্নে একাধিক চুরির ঘটনা হয়। চোরেরা টাকা সহ প্রায় ৫/৬ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। বর্তমান ওসির পূর্বে সম্প্রতি কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে অবস্থিত কাটাখালি গ্রাম সংলগ্ন থেকে দিনের আলোতে পরিবহনে প্রায় সময় ডাকাতি সংঘটিত হচ্ছে। ওই গ্রাম হতে খামার থেকে প্রায় দশ লক্ষ টাকার মুরগিও চোরেরা নিয়ে যান। উপজেলার চন্দ্রঘোনা, লালানগর, ধামাইরহাট, ইসলামপুর, রাজানগর, পোমরা সহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ডাকাতি সহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা বেড়ে উঠেছে। এসব অপরাধের সাথে শতকরা ৮০ জন মাদকসেবন কারীরা সংপিক্ত রয়েছে।

রাঙ্গুনিয়ার সাবেক সাংসদ শহীদ সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী পুত্র বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী রাঙ্গুনিয়া জুড়ে মাদকের অবাধ বিস্তার প্রসঙ্গে তার বক্তব্যে বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ীরা কোন রাজনৈতিক দলের নয়। এরা জাতির শত্রু, ওদের রক্ষা নাই। এসব মাদক কারবারি কে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ উনি আহবান করেছেন। রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমি রাঙ্গুনিয়া থানায় সবে মাত্র যোগদান করেছি। মাদক ও বিভিন্ন অপরাধে সাথে যারা সংপিক্ত ওদের কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। ইতিমধ্যে কয়েকটি স্পটে জুয়া বন্ধের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মাদকের ব্যাপারে একদম ছাড় নাই। মাদক সহ সব ধরনের অপরাধের সাথে যারা সংপৃক্ত তাদের কে ধরার জন্য সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। *


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর