আজ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সৌদি আমেরিকা

তেল নিয়ে বিরোধ, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ভাঙছে সৌদির!


দীর্ঘদিনের মিত্র সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক ‘পুনর্মূল্যায়ন’ করা হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তেল উৎপাদন কমানো নিয়ে বিরোধের জেরে সম্প্রতি এ ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন। গত ৫ অক্টোবর সৌদি নেতৃত্বাধীন দেশগুলোর জোট ওপেক ও এর মিত্রদের জোট ওপেক প্লাস এর এক সিদ্ধান্ত আমেরিকার বিপক্ষে যাওয়ায় এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে আমেরিকা। ওপেকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে শুধু সৌদি আরবকেই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের আরেক মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতকেও দায়ী করেছে আমেরিকা।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ওপেক প্লাস ২ শতাংশ পরিমাণ তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। মিত্র হিসেবে সৌদি আরবের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা ছিল দেশটি তেলের উৎপাদন বাড়াবে। কিন্তু সৌদি আরব করেছে এর বিপরীত। দেশটি সহ ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো এরই মধ্যে প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। ফলে বিশ্ব বাজারে বেড়ে গেছে তেলের দাম।

সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্তের কারণে এরপর থেকেই আমেরিকার আইন প্রণেতারা দেশটির সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, সৌদি আরব রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষা করছে। ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা ইউক্রেন যুদ্ধে কার্যত রাশিয়াকে সমর্থন করার নামান্তর মন্তব্য করে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিসহ যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট সিনেটর বব মেনেন্দেজ।

আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস মঙ্গলবার বলেছেন, আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে ও বিদেশে মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ করে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পর্যালোচনা করছে।

নেড প্রাইস বলেন, ‘আমরা কোথায় আছি তা পর্যালোচনা করছি; আমরা খুব ঘনিষ্ঠভাবে তা পর্যবেক্ষণ করবো, অংশীদার ও মিত্রদের সঙ্গে কথা বলবো।’

এর আগে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সিএনএনকে বলেছিলেন যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রিয়াদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করতে ‘ইচ্ছুক’।

ওপেক ও রাশিয়া মিলে সম্প্রতি জ্বালানি তেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ভোক্তা পর্যায়ে তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে। নেড প্রাইস অভিযোগ করে বলেন, ওপেক প্লাস আমেরিকানদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে।

তবে সৌদি আরব বলছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার বৃদ্ধি এবং বিশ্ব মন্দার সম্ভাবনার মধ্যে তেলের বাজারকে স্থিতিশীল রাখার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের সমর্থকদের যুক্তি হলো, ওয়াশিংটন ও রিয়াদের মধ্যকার সম্পর্ক পরস্পরের জন্যই উপকারী- আমেরিকার পক্ষ থেকে কোনো দয়া নয়।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ মঙ্গলবার আল আরাবিয়াকে বলেছেন, ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্তটি গ্রুপের সদস্যদের সর্বসম্মত চুক্তিতে নেওয়া একটি বিশুদ্ধ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। একই সঙ্গে বিন ফারহান আমেরিকা ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ককে ‘কৌশলগত’ বলে প্রশংসাও করেছেন।

তিনি দাবি করেন, ‘রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা উভয় দেশের স্বার্থে কাজ করে এবং এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে অবদান রাখে।’ কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটনের অনেক আইনপ্রণেতা রিয়াদের সঙ্গে জোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর