সরকারের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে স্কুল ও কলেজের জন্য ১১ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর গত শনিবার এসব নির্দেশনা জারি করে। এতে বলা হয়, করোনাভাইরাস জনিত রোগ কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে মেনে সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে আক্রান্ত না হয় এবং নিরাপদে থাকে, তারজন্য এই নির্দেশনা। এতে আরো বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধকালীন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বাস্তবতার ভিত্তিতে অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে শিখন-শেখানো কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। এছাড়া যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চলমান থাকবে। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অফিস, জেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা-থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস স্থানীয় প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের সাথে সমন্বয় অব্যাহত রাখবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধকালীন শ্রেণি কক্ষ, গ্রন্থাগার, গবেষণাগারসহ প্রতিষ্ঠানের সকল বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেট, পানি এবং গ্যাস সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও সামগ্রিক নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রতিষ্ঠানের জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনপূর্বক শিক্ষক ও কর্মচারীদের দায়িত্বে নিয়োজিত রাখতে পারবেন। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাসে বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছে তাদের সুবিধার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাসসমূহ খোলা থাকবে। তবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের সুস্থতার জন্য এমন পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ১২ বছরের উপরের বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে সরকার। স্কুল ও কলেজের জন্য ১১ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় যথারীতি চালু থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জ্ঞান নিয়ে ‘২০৪১ এর সৈনিকদের’ প্রস্তুত করার ওপর নানা সময়ে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, প্রযুক্তি শিক্ষায় এবং জ্ঞানভিত্তিক যে সমাজ আমরা গড়তে চাই- আমাদের দেশটা সে পথে অনেকদূর এগিয়ে গেছে এবং অবশ্যই বাংলাদেশ ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার সৈনিকরা প্রস্তুত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অর্থাৎ রূপকল্প ২০২১ এর যে চিন্তা চেতনাগুলো ছিল, লক্ষ্যগুলো ছিল সে লক্ষ্য আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির দিকে আমাদের সন্তানদের এগিয়ে নিতে হবে। আর সেই ভবিষ্যতের জন্য আমাদের যারা নতুন প্রজন্ম তাদেরকেও প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের দেশের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও কিন্তু তাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে অনেক কিছু আজকে তৈরি করছে। বাংলাদেশের জনগণ সেই সেবাটা পাবে, পাচ্ছে এবং তাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটা সুযোগ হচ্ছে। আজকের শিশুদের মেধা ও মনন বিকাশে সরকার যে সুযোগ করে দিয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে তা সম্ভব ছিল না। ছেলেমেয়েদের মধ্যে যে মেধা রয়েছে সেটাকে বের করে নিয়ে আসা এবং সেটাকে দেশের কাজে লাগানোই তাঁর সরকারের লক্ষ্য। সেক্ষেত্রে সরকার সত্যিই অনেক বেশি সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে। সরকার বোঝে যে বাস্তব কর্ম জীবনের সাথে সম্পৃক্ত ছাড়া শিক্ষা অর্থহীন। বড় সার্টিফিকেট বাস্তবে কোন কাজে লাগে না। কারিগরি দক্ষতা থাকলে তা কাজে লাগে। তাই সকল মানুষকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আমাদের তরুণ জনশক্তি হচ্ছে সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা। নতুন প্রজন্মের সকলকে দক্ষতা দিতে হবে। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। এ জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্থ থাকার ও সুস্থ রাখার ওপর জোর দিয়েছে সরকার। এরাই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। এদের গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষক-অভিভাবক-আমাদের সবার। শিক্ষকরা নতুন প্রজন্মকে দক্ষ ও যোগ্য মানুষ হিসেবে তৈরি করবেন। মানুষ গড়ার মূল কাজটি তারাই করছেন। কেননা, মানসম্মত শিক্ষা ছাড়া তো কোনোভাবেই অগ্রগতি সম্ভব নয়। কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে সাময়িক সুখ লাভ করা গেলেও টিকে থাকা দায়।
Leave a Reply