আজ ১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

খুমেক হাসপাতালে রোগীর খাবারে ব্যাপক অনিয়মে দুদকের অভিযান


মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা:

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর খাবারে অনিয়মে দুদকের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। আজ দুপুর ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক)। এ হাসপাতালে রোগীদের খাবারে ব্যাপক অনিয়মের প্রমান পেয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত হাসপাতালের হাবিবুর রহমান নামে এক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কতৃপক্ষ। দুদক খুলনা কার্যালয়ের উপ পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,হাসপাতালে রোগীদের খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এখানে রোগীদের দুপুরে যে খাবার দেওয়া হয়,সেটি রোগীদের বিতরনের আগেই রান্না ঘরে পরিদর্শন করেছি।যাচাই করে দেখতে পাই, মোট রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪৯৪ জন।এর মধ্যে সিঙ্গেল ডায়ট যারা (ডায়বেটিস রোগী) সেগুলো বাদ দিয়ে দুপুরে ১৩৩৫ জনের খাবার তৈরি করেছেন বলে বলা হয়।কিন্তু যাচাই করে দেখতে পাই, দুপুরে মেন্যু ছিল মুরগীর মাংস ডাল ও ভাত। গগনা করে দেখতে পেয়েছি মুরগীর মাংসের সংখ্যা ছিল ১০৯৪ পিচ।৩৩০ পিচ কম পেয়েছি। তিনি বলেন, হাসপাতালের ডায়েট চার্ট অনুযায়ী জন প্রতি

রোগীর মাংস পাওয়ার কথা প্রায় ৯৫ গ্রাম।আমরা পরিমাপ করে পেয়েছি প্রতি পিচ ২৬.৪ শুন্য গ্রাম হয়।তার মানে হলো যে পরিমান মাংস পাওয়ার কথা তার চার ভাগের এক ভাগ দেওয়া হচ্ছে।এছাড়া ডায়েট চার্টে উল্লেখ আছে উন্নত। মানের চিকন চালের ( মিনিকেট) চালের ভাত রোগীদের দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এসে দেখেছি, সে চালটি দেওয়া হয় নি।দেওয়া হচ্ছে খুব মোটা রেশনের চাল।এই কর্মকর্তা বলেন,আমরা রান্না ঘরে প্রবেশ করার সাথে সাথে একজন ব্যাক্তি সাইকেলে করে কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।তাকে হাতেনাতে ধরে তার হেফাজত থেকে কাঁচা মুরগীর মাংস ৪ কেজি ৪৯ গ্রাম,ডিম ৪৯ টি, লাউ ৪ টি,কলা ১৮ টি,রান্না করা ভাত দুই পলি,চাল ২ কেজি,তেল,শুকনা ঝাল,কাঁচা মরিচ,পেয়াজ ১ প্যাকেট,পাউরুটি ৮ পাউপাউন্ড, লবন ১ প্যাকেট পাওয়া যায়।এসব ছিল রোগীদের জন্য। অবৈধ ভাবে চুরির উদ্দেশ্য এসব জিনিস বাহিরে নেওয়া হচ্ছিল। এখানে দায়িত্বরত যে স্টুয়ার্ড হাবিব ছিলেন, তাকে পাইনি।আউটসোর্সিং নিয়োজিত একজন কর্মী এগুলোর বিষয়ে কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি।দুদক উপ- পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ আরো বলেন,হাসপাতালে রোগীদের প্রতিদিন খাবার পরিক্ষা করার নিয়ম আছে।সেখানে তারা পরিক্ষার জন্য আলাদা ভাবে খাবার তৈরি করেন। কিন্তু রোগীদের জন্য যে খাবার বিতরন করা হচ্ছেতা একই খাবার নয়, সেটি পরিমান ও এক পঞ্চমাংশ এবং মান খুবই নিন্ম।খাবার পরিক্ষার জন্য একজনের বেশি একজনের বেশি খাবার থাকার কথা না,সেখানে আমরা দেখচি ২০- ২৫ জনের খাবার রাখা হয়েছে। হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা: মো: নুরুল ইসলাম বলেন,দুদকের অভিযান শুদ্ধি অভিযানের অংশ। অনিয়ম, পরিস্কার, পরিচ্ছন্নতার অভিযান অব্যাহত আছে।খুমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: মিজানুর রহমান বলেন, ২- ৩ দিন হয় তিনি হাসপাতালে যোগদান করেছেন। যারা এসব অনিয়মের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।হাসপাতালের একটি নির্ভর সুত্রে জানা গেছে,একেক জন রোগীর জন্য খাবারের বরাদ্দ ১৭৫ টাকা।সকালে ডিম,কলা ও পাউরুটি দেওয়া হয়।যেদিন রোগীদের খাবারের তালিকা করা হয় সেই তালিকা অনুযায়ী খাবার তৈরি হয় না।খুুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহসিন আলী ফরাজী বলেন,খাবারের দায়িত্বে থাকা স্টুয়ার্ড হাবিবুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে উপ- পরিচালককে আহবায়ক করে ৩ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর